বুধবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১১

প্রসঙ্গ যখন শিক্ষা: লেবু কচলিয়ে তিতা করি

[লেখাটি ২০০৯ সালের  ৪ঠা ফেব্রুয়ারী সামহোয়ার ইন ব্লগে আমার একাউন্টে প্রকাশিত হয়েছিল]


বেশ কয়েকদিন পর ব্লগে ঢুকলাম। অনেক কিছু লিখতে চাই কিন্তু লেখার ঠিক আগ মুহূর্তে আর কিছু লিখতে পারিনা। যাই হোক সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছি, বিষয়ও শিক্ষা তাই শিক্ষা নিয়েই কিছু লিখি।

আমি যখন ক্লাস টেনে পড়ি তখন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার দুরবস্থার কথা জানিয়ে শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যারকে একটি চিঠি লিখেছিলাম। জানি না, স্যার চিঠিটা পেয়েছিলেন কিনা। তবে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ করাটা আমার কাছে বাতিকের মত। এই বাতিক যেকোন সময় আমাকে বিপদেও ফেলতে পারে। মূল কথায় আসি। ক্লাস এইট থেকে অল্প-স্বল্প দুনিয়ার জটিলতা যখন বুঝতে শিখলাম তখন অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে বইতে যা পড়েছি তার অনেক কিছুই বাস্তবতার সাথে একেবারেই মিলে না। ছোটকালে অর্জিত অনেক নীতিকথারই বাস্তবে কোন প্রয়োগ নেই। কিছুটা চোখ-কান খুলতে শুরু করেছে তাই আবিষ্কার করলাম আমাদের পাঠ্যপুস্তকে এমন অনেক কিছুই রয়েছে যা নেহাতই অযৌক্তিক। যেমন ইংলিশে একটি প্রশ্ন থাকত যার নাম ছিল Re-arrange। তো সেইখানে কিছু বাক্য ক্রম লংঘন করে সাজানো থাকত সেগুলো ক্রম অনুসারে সাজাতে হতো। ভাল। কিন্তু লক্ষ্য করলাম যে আমি বহু চিন্তাভাবনা করে সাজালেও খুব কমক্ষেত্রেই তা ঠিক হয়। কিছু বাক্যগুচ্ছকে কিন্তু অনেকভাবে সাজানো যেতে পারে কিন্তু না পরীক্ষকের কাছে যে সিকোয়েন্স আছে আমাকে হুবুহু সেই সিকোয়েন্সেই সাজাতে হবে এমনকি সেই উত্তরে বাক্যগুলো পড়াও হবেনা শুধুমাত্র বাক্যগুলোর নির্দেশক বর্ণ এ,বি এগুলোর সিকোয়েন্স দেখে মুল্যায়ণ করা হয়। এমনকি পুরো সিকোনয়েন্সে একটিমাত্র সিকোয়েন্স ভুল হলে তার পরের পুরোটাই ভুল হয়ে যাবে। কোন বাক্যের পরে কোন বাক্য তা না দেখে বরং পুরোটা একটি ক্রম হিসেবে দেখা হয় যা আসলে রিঅ্যারেন্জের মূল উদ্দেশ্য পুরণে কোনভাবেই সফল নয়।
কমিউনিকেটিভ ইংলিশের নামে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি সাহিত্য থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত করা হয়। আর তথাকথিত কমিউনিকেটিভ ইংলিশ পড়ে প্রকৃতপক্ষে ইংরেজি শেখা যায় না। ঠিক তেমনি ফিল ইন দ্য গ্যাপস করেও ইংরেজি শেখা দুষ্কর হয়ে পড়ে। তবে স্যারদের কষ্ট কমে উল্লেখযোগ্য হারে কেননা তারা এসে হাতে একটি শিট ধরিয়ে দিয়ে ক্লাস শেষে তা মিলিয়ে চলে যান। ইংলিশ আর শেখা হয় না।

লেখা বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে। তারপরও আরও সমস্যার কথা না বলে হাঁপ ছাড়তে পারছি না। ইংলিশের ঐ সমস্যা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত জ্বালালেও ইসলাম শিক্ষার সমস্যা মাধ্যমিকেই ইতি টেনেছে। মাধ্যমিক শ্রেণীতে ধর্ম শিক্ষার উদ্দেশ্য যদি ধর্ম সম্পর্ক জ্ঞান দান হয় বা ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা জাগানো হয় তবে মাধ্যমিক শ্রেণীতে ইসলাম শিক্ষা বিষয়টির সিলেবাস ও প্রশ্নের ধরণ তা পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আমদের সময় ৫০ নম্বর থাকত অবজেক্টিভে। সেখানে বেশিরভাগ প্রশ্ন থাকত এরকম-

#মিথ্যা কথা বলা কেমন অপরাধ?
ক.জঘন্য খ.জঘন্যতম গ.মারাত্মক ঘ.জঘন্যতর

#কোনটি অতি গর্হিত কাজ?
ক.প্রতারণা খ.মিথ্যা বলা গ.হিংসা করা ঘ.অন্যের ক্ষতি করা

এগুলোর উত্তর হবে যথাক্রমে জঘন্যতম ও প্রতারণা কারণ বইয়ে তেমনটি দেওয়া আছে। বাংলা ভাষার উপমা যদি অবজেক্টিভ প্রশ্ন হয়ে যায় তবে ছাত্রদের জন্য তা কতটা মগজ খাওয়ার প্রক্রিয়া। লেখক মনের মাধুরী মিশিয়ে উপমা-বাগধারা দিয়ে রচনা লিখবেন আর তা ক্ষেত্র বিশেষে প্রশ্ন হয়ে যাবে।তালিয়া। এরকম হাজারো প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পাস করে আসতে হয়েছে আমাদের। পাঠকই বলুন এ ধরনের প্রশ্নের যৌক্তিকতা কতটুকু? এভাবে বইয়ের একেবারে ভেতর থেকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে বহু প্রশ্ন করা হত যা কিনা বই পড়ার সময় পূর্বের কোন কথার রেশ ধরে এসেছে কিন্তু পরীক্ষায় তা একক প্রশ্ন হিসেবে আসত। এগুলোকে আবার বলা হত টেকনিক্যাল কোশ্চেন। না বুঝে অন্ধের মত আরবী মুখস্থ করে তা বিশদ উত্তরের মাঝখানে দিলে মার্কস বেঝি পাওয়া যেত। বড়ই আফসোস। আমাদের দুর্ভাগ্য। এধরণের শিক্ষাব্যবস্থা কোন অশিক্ষিত ব্যাক্তিরা করেন আমরা জানি না আর শিক্ষাব্যবস্থা একবার প্রচলিত হলে তা মনিটরিং করা হয় কিনা তাও প্রশ্ন। (চলবে)

মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১১

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী নির্যাতন



গত ২৪ ডিসেম্বর দৈনিক প্রথম আলোর চিঠিপত্র বিভাগে "স্কুলে ভর্তির আগেই..." শিরোনামের লেখাটি কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে পড়ি। স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রশ্ন বুঝতে না পারায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে কর্তব্যরত শিক্ষিকা চড় মেরেছেন! ঐ লেখাটি আমার চোখ এড়িয়ে গেলেও পরদিন অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর আমার মা আমাকে লেখাটি পড়তে দেন এবং বলেন যে ছোটবেলায় আমার ক্ষেত্রেও প্রায় এ ধরণের ঘটনা ঘটেছিল। লেখাটি পড়েই সিদ্ধান্ত নিই যে এ বিষয়ে দু'টো কথা লিখব।

আমাদের দেশে কমবেশি সব শিশুই বিদয়ালয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার। পড়া না পারা, শ্রেণীকক্ষে কথা বলা, হাসাহাসি বা দুষ্টুমী করার জন্য শিক্ষক প্রায়ই শিশুদের প্রহার করে থাকেন। এখন দেখা যাচ্ছে বিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই ভর্তি পরীক্ষার দিনই শিশু শিক্ষক কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের শিকার! আমাদের সমাজ কোন পথ চলছে তবে? শিক্ষণবিজ্ঞান বিশেষত শিশু-শিক্ষণবিজ্ঞানে (Pedagogy) যে কথাটি অতি গুরুত্বের সাথে বলা হয়েছে সেটি হল শিশু-শিক্ষার্থীর জন্য নিরাপদ শ্রেণীকক্ষের প্রয়োজনীয়তার কথা। শিশু যদি শ্রেণীকক্ষে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে তাহলে সে শিখবে কী করে? আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হল "শিক্ষার্থীর জন্যেই শিক্ষা"। রাষ্ট্রের দায়িত্ব সকল নাগরিককে প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা। এটা সকল শিশুর অধিকার। শিক্ষার্থী যদি পড়া বুঝতে বা শিক্ষকের সামনে তা উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের দায়িত্ব শিক্ষার্থীকে তা বোধগম্য করানো ও যাচাই করা যে শিক্ষার্থী তা আসলেই বুঝেছে কিনা। তার এই দায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন কোন গ্রহণযোগ্য পন্থা বা কৌশল হতে পারে না। শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক আধুনিক শিক্ষণবিজ্ঞানের নানা কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। শিশুকে আনন্দঘন পরিবেশে অনেক কিছুই শিখিয়ে দিতে পারেন। গল্পের ছলে বা অভিনয়ের মাধ্যমে শিশু শিক্ষার্থীকে এমন অনেক বিষয় শিখিতে দিতে পারেন যা লেকচার নিয়মে শেখালে শিশুর বুঝতে ও মনে রাখতে অনেক কষ্ট হবে। শিক্ষক নিজের অদক্ষতাকে ঢাকতেই শিক্ষার্থীর উপর হামলা করেন এ কথা স্পষ্ট। অল্পবয়সী শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে অনেক হৈ চৈ করে থাকে। একজন সুশিক্ষিত ও দক্ষ শিক্ষক অবশ্যই জানেন কিভাবে তা কৌশলে নিয়ন্ত্রন করতে হবে। শিক্ষা মনোবিজ্ঞান ক্লাসে আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বলেছিলেন, "শিশুরা ক্লাসে হৈ চৈ দৌড়া-দৌড়ি করবে না তো কি আমি দৌড়া-দৌড়ি করব?" কী চমৎকার একটি কথা তিনি বলেছিলেন। আরও বলেছিলেন, শিশুরা দৌড়াদৌড়ি বা হৈ-হুল্লোড় করে তার শক্তি ক্ষয় করার জন্য। এটি একটি স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া। শিশুর শরীরে খাদ্য থেকে আগত শক্তি খরচ হওয়ার সাধারণ ও স্বাভাবিক একটি উপায় হল তার চাঞ্চল্য। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এ অভ্যাস পরিবর্তিত হয়। শিশুর স্বাভাবিক গতিকে অন্যায়ভাবে ব্যাহত করাটা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ তাদের সনাতন মানসিকতা ও শ্রেণীকক্ষ ব্যবস্থাপনার অদক্ষতার কারণে শিশুদের ওপর শারীরিক নির্যাতনের আশ্রয় নেন। অনেক শিক্ষকের ক্ষেত্রে এটি বিকৃত মানসিকতা চরিতার্থ করার নিকৃষ্ট পন্থা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পারিবারিক অশান্তির বহিঃপ্রকাশও শিশু নির্যাতনের মাধ্যমে প্রকাশ করেন অনেক শিক্ষক।

এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হলে প্রয়োজন শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা যার মাধ্যমে তাদের মানসিকতা উন্নততর হবে। উন্নত এবং সৎ চরিত্রের অধিকারী ও বিবেকবান ব্যক্তি যেন শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত হতে পারেন সেজন্য শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তা যাচাইয়ের সুযোগ থাকতে হবে। শুধু বিষয়জ্ঞান আর সাধারণ জ্ঞানের ওপর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করলে শিক্ষকতার গুণাবলী সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। এর পাশাপাশি অভিভাবক পর্যায়ে সচেতনতার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। অভিভাবকদের "সন্তান আমার, পিটিয়ে মানুষ করবেন শিক্ষক"- এ ভ্রান্ত ধারণা ও মানসিকতার অবসান ঘটাতে হবে। সর্বোপরি, স্কুল শিক্ষকদের নিম্ন বেতন-ভাতা ও সামাজিক মর্যাদার সংকট দূর করতে না পারলে উন্নত মানসিকতার তরুণ-তরুণীরা শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করবে না এবং এ ধরণের বহু সমস্যায় শিক্ষাব্যবস্থা  ও শ্রেণীকক্ষ জিম্মি হয়ে থাকবে।

সোমবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১১

বাংলাদেশে শিক্ষার সামগ্রিক উন্নয়নে শিক্ষকের বেতন বৃদ্ধিই কী সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি নয়?


 বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা যে নাজুক অবস্থায় রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তৃতীয় বিশ্বের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় যতগুলো সমস্যা থাকার কথা তার সবগুলোই এখানে আছে। তৃতীয় বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থায় গলদ যত বেশি তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের পকেট ভারী করার সুযোগও তত বেশি। এই প্রজেক্ট, সেই প্রজেক্ট-প্রজেক্টর কোন অভাব নেই। যত্রতত্র এনজিও'রও অভাবে নেই। বিদেশি ডোনারদের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতানোই এদের কাজ। যখন রাষ্ট্র তার অবশ্য পালনীয় কর্তব্যে ব্যর্থ হয় তখন বিদেশি দাতা গোষ্ঠীর মাধ্যমে ধনী রাষ্ট্রগুলো কিছু ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে শিক্ষা উন্নয়ন নিয়ে বহু প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। একটি প্রকল্প শেষ হয়েছে তার দ্বিতীয় ফেজ শুরু হয়েছে। দেশি বুদ্ধিজীবিরা বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা আর সাদা চামড়া ও চকচকে কালো চামড়ার বিদেশি বিশেষজ্ঞরা নিয়েছে মোটা অংকের ডলার। কিছু গ্রামীণ বিদ্যালয়ের কাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে, পাঠ্যক্রমে বিদেশি পাঠ্যপুস্তকের জটিল অনুবাদ কপি-পেস্ট করা হয়েছে। এতে পাঠ্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অসামঞ্জস্যতা প্রকট হয়েছে। আর যেটা হয়েছে সেটা হল বছরে বছরে শিক্ষাক্রমের পরিবর্তন। প্রচুর শিক্ষার্থী হয়েছে গিনিপিগ। শিক্ষাব্যবস্থার মৌলিক গুণগত পরিবর্তন খুব সামান্যই হয়েছে। এর পেছনের কারণ খতিয়ে দেখলে দেখা যায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি গ্রহণ, বিদেশ গমন, শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ না করা আমলা কর্তৃক শিক্ষাক্রম প্রস্তুতকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণকে গণহারে শিক্ষাবিদ উপাধি দিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করানো। শিক্ষাবিজ্ঞান এখন এত বড় একটি ক্ষেত্র যে এটি নিয়ে দীর্ঘ সময়ে কাজ না করলে এবং তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক পর্যায়ে যথাক্রমে পড়াশোনা ও কাজ না করলে কোন স্থায়ী, গ্রহণযোগ্য ও মানসম্মত শিক্ষা পদ্ধতি উপহার দেওয়া সম্ভব নয়। তার চেয়েও বড় ব্যাপার হল, প্রচলিত শিক্ষাক্রমেই অনেক উন্নতমানের শিক্ষা নিশ্চিত করা যেত যদি মেধাবী ও উন্নত মানসিকতার তরুণরা গণহারে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিত। আইন যেমনই হোক না কেন যোগ্য ও সৎ বিচারপতি ঠিকই ন্যায়বিচার উপহার দিতে পারেন। ঠিক তেমনি শুধুমাত্র সমাজের উচ্চ মেধা স্তরের ছেলেমেয়েদের স্কুল পর্যায়ের শিক্ষকতা পেশায় সম্পৃক্ত করা গেলেই বর্তমান শিক্ষা সমস্যার সিংহভাগ সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হল, শিক্ষাখাতে ব্যয় হওয়া বিশাল অংকের টাকা কার্যকর উপায়ে ব্যয় না হয়ে বিদেশি উন্নয়ন ও দাতা সংস্থার কুটিল শর্ত অনুযায়ী অদক্ষ সরকারি লোকজন দ্বারা ব্যয় করা হয়। শিক্ষা উন্নয়নের বেশিরভাগ বাজেট চলে যায় উচ্চশিক্ষিত পিএইচডিধারী বিশেষজ্ঞগণের সম্মানীর পেছনে এবং প্রকল্পে ব্যবহৃত গাড়ি ও তার তেল কিনতে। এই টাকা যদি সমগ্র বাংলাদেশের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ে ব্যয় করা হত তাহলে শিক্ষার উন্নয়ন আজ পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হত। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ও সামাজিক মর্যাদা যদি উচ্চ হত তাহলে আমাদের উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবী তরুণ সমাজ বাণিজ্যিক ব্যাংক, মোবাইল কোম্পানি প্রভৃতি বহুজাতিক কোম্পানির দিকে না ঝুঁকে নিজেদের শিক্ষকতার মহান পেশায় নিয়োজিত করত। এতে উপকার হত আমাদের দেশের। আজ একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্যতীত আর কোন পর্যায়ের শিক্ষক মানুষ শখ করে হতে চায় না সামাজিক মর্যাদা ও স্বল্প সম্মানীর কারণে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন বোধহয় এখনই।

সোমবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১১

Right in the exam hall!!

My classmates are habituated to see me sit still instead of writing in the exam hall. I usually observe my classmates as well as friends and hall invigilators during the exam period. My friends cum fellow examinees are busy writing down to fulfill the need of the question paper and the only job I do is to see them happy and tensed while writing and thinking. As I don't do any particular job there, it's obvious for me to have an eye contact with the invigilators. I think they are astonished to see me sitting comfortably without doing the thing I have to and pass words among themselves. They also try to observe me to secure the unfair means as it is obvious that I don't know anything and may try to poke other. With the passing of time, the situation between the invigilators and the students become easy, assistants serve the invigilators very light snacks and they really enjoy it! I too enjoy the common scenes regularly. It seems that I'm the same guy who is the constant observer. However, I'm one of the fortunate persons who has the opportunity to observe sharply and constantly his fellow examinees during a serious test!

Some questions are arisen from the story. Why don't or can't I write in the exam hall? Why do I write this here? Is it good for me to do the thing I explained earlier? How can I overcome this? Am I the only person responsible for this kind of situation?

The answers may come in the next posts.

Good Bye.
Thanks for reading by blog.

রবিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১১

শ্রেণীকক্ষের বাইরের শিক্ষাই কি মনে থাকে বেশি?

শিক্ষক বলেছিলেন, "আমরা সবচেয়ে বেশি শিখি অনানুষ্ঠানিকভাবে।" এ কথাটা খুব বেশি মনে পড়ে যখন দেখি শ্রেণীকক্ষে অর্জিত জ্ঞান নিমেষেই বিলীন হয়ে যায় অথচ বন্ধুদের আড্ডায় আহরিত জ্ঞান ভুলতে পারি না চেষ্টা করেও। তাহলে কেন আমরা আমাদের সব আয়োজন এই শ্রেণীকক্ষের শিখনের জন্য করে থাকি? কেন আমরা নিজেদের পছন্দকে বিসর্জন দিয়ে অন্ধভাবে অনুসরন করি আরেকজনের পছন্দের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা পাঠ্যক্রমকে? কথাগুলো প্রায়শ তাড়া করে ফেরে আমাকে!